03 June 2021

চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে এ কেমন ব্যবহার?

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমাদের দেশের প্রথম শ্রেনীর হাসপাতালগুলোর একটি। কিন্তু এই মেডিকেলের বর্তমান অবস্থা এতই খারাপ হয়েছে যে তা কল্পনার বাইরে। বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে এই হাসপাতাল সম্পর্কে যা জানতে পারলাম তা রীতিমতো ভয়ানক। নিচে তার কিছু বর্ননা উপস্থাপন করছি।


হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগী নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ১০ টাকার টিকেট নিতে হবে। টিকেট নেওয়ার পর যদি রোগী ভর্তি করতে হয় তাহলে ১৫ টাকার আরেকটি টিকেট। সেই টিকেটে লিখা ১৫টাকা কিন্তু টিকেট নিতে হয় ২০ টাকায়। টিকেট নেওয়ার পর রোগীকে হুইল চেয়ারে করে ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে ১০০টাকা। আর রোগীর অবস্থা খারাপ হলে ট্রলি দিয়ে নিতে ২০০টাকা। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পর রোগীর সাথে ১জনের বেশি প্রবেশ করলে জন প্রতি ২০ টাকা, ৫০ টাকা হলে বেড আছে। না হয় মাটিতে। রোগী ভর্তি শেষ। এবার ডাক্তারের পালা। 

ডাক্তার আসবে রোগী দেখবে। তারপর শুরু হবে পরীক্ষা। প্রথমে কমপক্ষে ৪টি পরীক্ষা সাথে ১ বস্তা স্যালাইন ও কিছু ঔষধ। পরীক্ষার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত স্যালাইন আর ঔষধ চলবে। রিপোর্ট আসার পর আরেক ডাক্তার আসবে সে দেখে আবার অন্য পরীক্ষা দিবে। এভাবে প্রতিদিন ডাক্তার পরিবর্তন হবে আর এক টার পর একটা পরীক্ষা দিবে। পরীক্ষা করাতে হুইলচেয়ারে নিয়ে গেলে ১০০টাকা আর ট্রলিতে নেওয়া লাগলে ২০০ টাকা ওয়ার্ড বয়কে দিতে হবে। আর প্রতিদিন নতুন নতুন ঔষধ যোগ হবে।প্রতিদিন রোগীর সাথে দেখা করতে আসলে দারোয়ানকে খুশি করতে হবে।

সব পরীক্ষা শেষ। এবার অপারেশন এর পালা। অপারেশন করতে ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকার ঔষধ কিনে ডাক্তারের হাতে দিতে হবে। যাহা অফেরতযোগ্য। অপারেশনে যদি রোগী মারা যায়। টাকা এবং মানুষ সব শেষ। হাতে ভিক্ষার বাটি। আর অপারেশন যদি সাক্সেস হয়। অপারেশন থিয়েটারের বয়কে খুশি করতে হবে। দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। এবং প্রতিদিন ড্রেসিং করার জন্য ও খাওয়ার ঔষধ কিনতে হবে। রোগী সুস্থ এবার রিলিস দেওয়ার পালা। নার্সকে খুশি করতে হবে। দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। ওয়ার্ড বয়কে খুশি করতে হবে। 

সবাইকে খুশি করে লেংটা হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তারপর বাহিরে এসে দেখবেন জাতির সেই ব্যানার ঝুলে আছে, আমি ও আমরা সবাই সাধু! এই হলো আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আসল চিত্র।