12 June 2021

যৌন নিগ্রহঃ দুর্বৃত্তায়নের আরেকটি নতুন খাত

এতদিন যাবত সড়কে চালকদের বেপরোয়া গাড়ী চালনা এবং চালকের সহায়তাকারীদের সীমাহীন ঔধ্যত্ব আমরা দেখে এসেছি। যার পরিণতিটাও স্পষ্ট। সড়কে মৃত্যুর মিছিল। ব্যাংক থেকে লোণ নিয়ে ঋনখেলাপির মিছিল দেখেছি। যার পরিণতিও দেখেছি একের পর এক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ও দেউলিয়া হয়ে যাওয়া। আমরা দেখেছি দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। এ সবই এখন আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে। 


দুর্বৃত্তায়নের এই পৌনঃপুনিক এই রূপটির একটিই কারণ, আর তা হল বিচারহীনতা। এই বিচারহীনতা মূলত দুর্বৃত্তায়নকে এক ধরনের বৈধতা প্রদানেরই নামান্তর। এর ফলে যেটা হচ্ছে তা হল দেশে দুর্বৃত্তায়নের খাত বাড়ছে, দুর্বৃত্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। যেমন, ইদানীং এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিত্তশালীদের নারী নিগ্রহ। এটা যে পূর্বে ছিল না তা নয়। ছিল, তবে সেটা আড়ালে আবডালে এখন সেটা খুল্লাম খুল্লা।

রাজনৈতিক সুবিধা আদায়, পেশিশক্তির আস্ফালন, বিচারহীনতা, দুর্নীতি, প্রশাসনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দেয়া ইত্যাদি কারণে পূর্বে যেমন দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি, তেমনি করে হয়ত এবার অর্থের প্রভাবে নতুন করে তৈরি হওয়া যৌন সন্ত্রাসীরাও অধরাই থেকে যাবে।

প্রসঙ্গটা সঙ্গত কারণেই উঠছে যে বেশ কিছুদিন ধরে একটার পর একটা হাই প্রোফাইল যৌন নিগ্রহের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যার কোনটিরই এ পর্যন্ত সুরাহা হয়নি। ফলে যৌন সন্ত্রাসীরা ক্রমশ আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিপুল বিত্ত বৈভবের ফলে তারা যেন ধরেই নিয়েছে, তাদের সাত খুন মাফ। এটা নিশ্চয়ই কোন ভাল লক্ষণ নয়।

এ দেশে বড় অপরাধীরা সাধারণত ধরা পরে না। ধরা পরলেও বিশেষ সুবিধা লাভ করে। সড়কে খুন, অর্থ পাচার, ব্যাংকের টাকা লুট এ সব অপরাধ তো এখন বৈধতা পাওয়ার পথে। দেশ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া স্বত্বেও এই অন্যায়গুলি এখন প্রায় বৈধ। এর সাথে নতুন করে যুক্ত হল বিত্তশালী কর্তৃক নারী নিগ্রহ। আমরা কি ধরে নেব এবার এটাও বৈধতা পাবে? যদি তাই হয় তাহলে আর বলতে দ্বিধা নেই অচিরেই বাংলাদেশও একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।