ভালোবাসার জন্য, ভালোবাসা বিলানোর জন্য, ভালোবাসায় কাছের দূরের সকলকে, প্রত্যেককে, সবাইকে আপন করে নেয়ার জন্য, বুকে জায়গা করে দেয়ার জন্য, আত্মার বন্ধনে জড়িয়ে নেয়ার জন্য, হৃদয়ের অতলান্তে ঠাঁই দেয়ার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। কোনো ক্ষণের দরকার নেই। কোনো লগনের চিন্তা নেই। থাকা উচিত নয়। ভালোবাসা সার্বজনীন। ভালোবাসা সর্বকালীন। ভালোবাসা সর্বদা বহমান। বুকের ভেতর ভালোবাসার ফল্গুধারা নিত্য নিয়ত নিরন্তর বহমান। পাহাড়ি ঝর্ণার মত। সাগারের স্রোতের মত। হিমেল হাওয়ার মত।
যাদের হৃদয় আছে, তাদের ভালোবাসা রয়েছে। হৃদয়বানের হৃদয়ে ভালোবাসার অথৈ ঢেউ। উছলে উছলে পড়ে। তার ভালোবাসার কোনো কাল দিন মাস নেই। তার সকাল নেই। সাঁঝ নেই। দুপুর নেই। রাত নেই। বিকেল নেই। গোঁধুলিবেলা নেই। প্রভাত নেই। প্রাতঃ নেই। তাঁর বুকের গহীনে সৃষ্টিকর্তা প্রাণদাতার প্রতি নিঃশর্ত নিঃসীম ভালোবাসা। নিজের জন্য তার ভালোবাসা। মায়ের জন্য ভালোবাসা। বাবার জন্য ভালোবাসা। সন্তানের জন্য ভালোবাসা। স্ত্রী পুত্র পরিবার পরিজনের জন্য ভালোবাসা। আত্মীয় স্বজনের জন্য ভালোবাসা। পশু পাখি গাছপালা সাগর নদী ঝর্ণা গিরি পাহাড় সৈকতের জন্য ভালোবাসা। মাটি ও মানুষের জন্য ভালোবাসা। দেশের জন্য ধরিত্রীর জন্য ভালোবাসা। আকাশের জন্য ভালোবাসা। বাতাসের জন্য ভালোবাসা। চাঁদের জন্য ভালোবাসা। সূর্যের জন্য ভালোবাসা। গোটা সৃষ্টিকুলের জন্য ভালোবাসা। ভালোবাসা তাঁর কাছে ইবাদাততুল্য। মহান প্রতিপালকের সন্তুষ্টির কারণ।
ভালোবাসার এক অদেখা বন্ধনে সে আবদ্ধ। পিপিলীকার প্রতি, গুবড়ে পোকার প্রতি, টিকটিকি, ইঁদুর, বিড়াল, পথকুকুর, দুর্বা ঘাসের প্রতি, সবুজ কঁচি কোমল পাতার প্রতি, লাউয়ের ডগার প্রতি তার অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসার বন্ধন। অদেখা আত্মীয়তা। গোটা পৃথিবী এবং পৃথিবীর বাইরের দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য সকলেই তার পরিবারের সদস্য। তার আবার ভালোবাসার দিবসের প্রশ্ন উঠবে কেন? ক্ষণের প্রশ্ন কেন? লগ্ন বা তিথীর কথা কেন? মওসুম বা পর্ব কেন? সিজন বা ঋতু কেন? তার তো জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি দিনই ভালোবাসার।