বাংলাদেশের নতুন যন্ত্রনা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি অন্যায় নিপীড়নমূলক আইন। এর মাধ্যমে সরকার যাকে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে মেরে ফেললেও কেউ কিছু বলতে পারবে না। বললেই ওকেও ধরে নিয়ে গিয়ে পুলিশি ডলার ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্বের কোন গণতান্ত্রিক দেশেই এমন আইন থাকতে পারে না। স্বৈর শাসকরা এমন আইন পাশ করিয়ে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখেন। আওয়ামীলীগ যদি সত্যিই মন থেকে দাবি করে থাকে দেশে গণতন্ত্র আছে, এবং তাঁরা সেটা বিশ্বাস করে থাকেন, তাহলে এমন আইন চোখে আঙ্গুল দিয়ে বাস্তবতা দেখিয়ে দেয়।
যে কারনে বলছি এমন কালো আইন অতি ভয়াবহ তা হচ্ছে, একজন লেখককে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যার প্রতিবাদ করা একটি পোস্টেই দেখলাম একজন সরকারি অফিসার এসে এই অন্যায়ের পক্ষে সাফাই গাইলেন। জাস্টিফাই করার চেষ্টা করলেন সরকারের বিরুদ্ধে বললে সরকার উচিৎ শিক্ষে দিবেই, এটা খুবই স্বাভাবিক। প্রশাসনে কাজ করা একজন লোকের যদি এমন মেন্টালিটি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর সেটা বুঝতে আইনস্টাইন পর্যায়ের বুদ্ধিমত্তা লাগেনা। আপনি সহমত ভাই বলে কতদিন চালাবেন? আজকে যার বিরুদ্ধে অন্যায় হচ্ছে, একদিন এই আইন আপনার বিরুদ্ধেই প্রয়োগ হবে।
সাথে দেশের আরেকটি হাস্যকর আইন বাতিল নিয়েও জনগনের আর্জি করা উচিৎ। সেটি হচ্ছে, দন্ডিত খুনের আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার অধিকার আইন। একটা লোক খুন করেছে, আদালতে প্রমান হয়েছে, আদালত তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে, নিহতের পরিবার অপেক্ষায় আছেন কবে লোকটাকে দড়িতে ঝুলানো হবে, এর মাঝে মহামান্য রাষ্ট্রপতি খুনিকে ক্ষমা করার কে? আদালতে প্রমাণিত একটা খুনিকে ক্ষমা করার অধিকার রাষ্ট্রপতি পান কিভাবে? তাহলে দেশে আইন আদালত ইত্যাদির প্রয়োজন কি? নিহতের পরিবারকে কি ক্ষতিপূরণ দেয় রাষ্ট্র? যার বাবা মা মারা গেছে, ছেলে মারা গেছে, কিংবা মেয়ে, রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করার সময়ে কি তাঁদের ফিরিয়ে দিতে পারবেন? তাহলে কি এটি বিচারের নামে প্রহসন নয়?
যাই হোক, কথা বেশি টেনে লাভ নেই। জানি আমার কথায় কিছুই যাবে আসবে না, তারপরেও মনে হয় আওয়াজ তোলা উচিৎ, এইসব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ফাইন ইত্যাদি অবিলম্বে বাতিল হোক। সাথে বাতিল হোক দন্ডিত খুনের আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার অধিকার আইন।