01 November 2020

প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা কে দেবে?

আমরা গরীব দেশের মানুষ, এই সত্য অনস্বীকার্য। আমরা প্রায় প্রত্যেকে দেশ ছাড়ি মূলত জীবিকার তাগিদে। বিদেশ এসে অনেকে অনেক ভাবে প্রতিষ্টিত হয়ে গেলেও অধিকাংশই থেকে যাই খেটে খাওয়া দিন মজুর! আমেরিকা লন্ডন বা ইউরোপ সবখানে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিকেরা এখনো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী শ্রমিককে পছন্দ করে একমাত্র কম বেতনের কারণে! অর্থাৎ আমরা সস্তা, আমাদের মজুরির মূল্য কম! 


আমাদের দেশের মেয়েরাও অনেক বৎসর থেকে প্রবাসে শ্রম বিক্রি করতে আসেন! বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতেই গৃহকর্মের জন্য বাংলাদেশী নারীদের প্রেরণ করা হয়! কিন্তু নামে মুসলিম ঐ নাপাক গুলোর অধিকাংশের ঘরেই একাদিক স্ত্রী থাকার পরও নারী গৃহকর্মীকে শারীরিক লালসার বস্তুতে পরিণত করে, ধর্ষণ করে! পিতা পুত্র মিলে এক গৃহকর্মীর সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হবার কথাও শুনা গেছে বহুবার!

বাংলাদেশের নারীরাই অধিকাংশ ভাবে সেই সব অত্যাচারের শিকার হয়ে নিহত হোন। কারণ ফিলিপিন বা ইন্দোনেশিয়ান ও শ্রীলঙ্কার গৃহকর্মীরা যত সহজে এসব নোংরা পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে বাংলাদেশিরা তত সহজে এসব মেনে নিতে পারেনা! তারা প্রতিবাদ করে, পালাতে চায়, পুলিশে যেতে চায়, দেশে ফিরতে চায় এবং শেষমেশ নিহত হয়!

গত শনিবারে সৌদি আরব থেকে এক কিশোরীর মরদেহ এসেছে। কাগজপত্রে আত্মহত্যা বলা হলেও আত্মহত্যা না। সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। ১৩ বছরের একজন কিশোরী কীভাবে বিদেশে যায় কাজ করতে, এ প্রশ্নের জবাব দেবার মতো আমাদের দেশে আসলে কেউ নেই! একটি দেশ এতো উদ্ভট হয় কী ভাবে? গত আগস্টেই সৌদিতে মৃত্যু হয় ১৪ বছরের কিশোরী কুলসুমের। অক্টোবরে সৌদি থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরেন খুলনার রুনু বেগম।

করোনার ৮ মাসে সৌদি আরব থেকে ২২ জন, লেবানন থেকে ১৪, জর্ডান থেকে ১১, ওমান থেকে ৭, আরব আমিরাত থেকে ৪জন নারী কর্মীর মরদেহ এসেছে। গত চার বছরে সৌদি আরব থেকে ১৭৫জনের লাশ এসেছে। অবশ্য সরকারি হিসাব এটা। প্রতিটি মৃত্যুই প্রশ্নবিদ্ধ। এসব মৃতের অধিকাংশের শরীরে অকথ্য অত্যচারের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরপরও আমাদের মেয়েরা আমাদের বোনেরা দেশ ছাড়ছে, ছাড়তে হচ্ছে! কিন্তু রাষ্ট্র কি করছে তাদের জন্য?