15 April 2020

করোনা বাস্তবতা: স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান অবস্থা

করোনা মোকাবেলায় আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের গালভরা কথার বিপরীতে বাস্তবতা এখন অনেকটাই দিবালোকের মতো খোলাসা। প্রথমত যেখানে জরুরী প্রতিরোধক স্থাপন করার কথা সেই বন্দর সমূহ ছিল অরক্ষিত। প্রধান বিমান বন্দর ছিল কাগুজে বাঘের মতো। স্ক্যানারগুলো ছিল সাজের নাও তাজের বৈঠা। থার্মাল স্ক্যানারের মাঝে ১/২ টি ছিল সচল। 

যার অব্যবহিত ফল হিসেবে বেড়ে যাচ্ছিল কিউ। বাড়ছিল প্রতিবাদ। আর বাড়ছিল আত্মঘাতি ফাঁকি দেবার প্রবণতা। কিছু টাকা নিয়ে স্ক্যানিং না করেই ছেড়ে দেবার বিষয় ছিল বিস্ময়ের সাথে টক অব দা টাউন। ফল যা হবার তাই হল। ব্যাপক ভাবে প্রবাসীদের মাধ্যমে প্রথম ট্রান্সমিশনটা সফল ভাবে হয়ে গেল।

অন্যান্য দেশে যখন জানুয়ারীর শেষ দিকে বা ফেব্রুয়ারীর শুরু থেকেই ছিল সদা সতর্ক আমাদের ঘোষনা আসতে আসতে চলে গেল ১৮ মার্চ। দীর্ঘ দুই মাসের অবহেলায় আরেকদফা স্যালাইন ঘুটার মতো ভাইরাস মিশে গেল কমিউনিটি ট্রান্সমিট লেভেলে। সতর্কতা, সচেতনতা, লক ডাউন, কোয়েরনটাইন নতুন নতুন টার্ম গুলও আত্মস্থ হবার আগেই মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেল। 

যেখানে হু এর প্রধান শ্লোগান ছিল টেষ্ট, টেষ্ট এবং টেষ্ট। সেখানে আমাদের টেষ্ট কেন্দ্র দীর্ঘদিন রইল সবেধন নীলমনি আইইডিসিআর। লাখো লাখো প্রবাসী এবং সম্ভাব্য সংক্রমনের আশংকার মাঝে মাত্র দুই তিনশ টেষ্ট হচ্ছিল দিনে। কিউ লম্বা হচ্ছিল, বাড়ছিল সংক্রমন।

 সরকারী হিসেবের বাইরে ঠান্ডা সর্দিজ্বরের মৃত্যুর হার আশংকাজনক বেড়ে গেল। অতপর ধীরে ধীরে টেস্টের অনুমোদিত কেন্দ্র বাড়লেও টেস্টের পরিমান হাজার বারশ’র মধ্যে উঠানাম করতে লাগলো। রোগী বেড়ে গেল জ্যামিতিক হারে। টেস্ট হচ্ছিল গানিতিক হারে! একজন সাধারন রোগীও ভর্তি হতে পারছে না। সর্দি জ্বর শুনলেই হাসপাতালের পর হাসপাতাল এম্বুলেন্স ঘুরছে। কেউ ভর্তি নিচ্ছে না? কি জঘন্য। কি অমানবিক!

আমাদের স্বাস্থ্যখাতে বড় বড় নাম, পদবি আর প্রতিষ্ঠান থাকলেও কার্যকর অবকাঠামো নেই, নীতি নেই প্রমানীত হলো। অলিতে গলি ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক, হাসপাতাল গজিয়ে উঠলেও আপদকালীন তা উপকারী না হয়ে বোঝায় পরিণত হলো। অথবা সরকার তাদেরকে ব্যবহার করার মতো যথাযথ পরিকল্পনা করতে ব্যার্থ হলো।