01 August 2019

শোকের মাসের অসুখঃ যা দেখলে বঙ্গবন্ধু নিজেই আত্মহত্যা করতেন

এখন আগস্ট মাস। বাংলাদেশের শোকের মাস। বঙ্গবন্ধু এই মাসে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নিহত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সারা মাস জুড়ে আয়োজন করবে নানা অনুষ্টানের। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্টানেও চলবে নানা আয়োজন। সেটা অবশ্যই ভালো জিনিস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্তপতির স্মরণে আয়োজন হতেই পারে। কিন্তু শোকের মাস ঘিরে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা মোটেও সুখের না। এই মাস এখন হয়ে গেছে আওয়ামী দুর্বৃত্তিপরায়নতার মাস। এই মাসে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠন যে পরিমাণে চাঁদাবাজি আর দুর্বৃত্তিপরায়নতায় লিপ্ত হয় তা দেখলে বঙ্গবন্ধু নিজেই আত্মহত্যা করতেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিয়ে আর কি বলবো। এরা বর্তমানে ছাত্র সংগঠন নামের কলঙ্ক। এমন কোন অপরাধ নেই যা ছাত্রলীগ করেনা। তাদের সেই অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায় আগস্ট মাসে। শোক দিবস পালনের নাম করে এরা করে যায় চাঁদাবাজি থেকে ডাকাতি পর্যন্ত। ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নানা অফিস-আদালতে চলে তাদের চাঁদাবাজি। রাস্তায় গাড়ি থামিয়েও হয় চাঁদাবাজি। এদের হাত থেকে বাঁচার উপায় নেই কারও। চাঁদা না দিলে ভাংচুর করা হবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অফিস কিংবা যানবাহন। কিন্তু এরজন্য বিচার চাওয়া যাবেনা কারও কাছে। বিচারকরাও তো এখন তাদের ভয় পায়। আদালত চলে তাদের ইশারায়।

আর সরকারি অফিস-আদালত তো এখন দুর্বৃত্তিপরায়নতার আখড়া। নিত্যনতুন পদ্ধতিতে এরা করে দূর্নীতির চর্চা। আগস্ট মাস তাদের দুর্নীতির মহা সুযোগ করে দিয়েছে। শোক দিবস উপলক্ষে যে কি পরিমাণ বাজেট এরা খরচ করে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না। কিছু সভা-সেমিনার এর নাম করে এরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় জনগণের করের টাকা থেকে। অথচ এর জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হয়না। জবাবদিহি চাইতে যাবে কে? জবাবদিহি চাইতে গেলে তো স্বাধীনতা বিরুধি তকমা লেগে যাবে। আর যে সরকার জবাবদিহি চাইবে তারা নিজেরাই তো এদের ব্যবহার করেছে মসনদে বসার কাজে।

আমরা ছোট থাকতে শিক্ষকদের একটা ভিন্ন মর্যাদায় বিরাজ করতে দেখেছি সমাজে। এরা ছিলো আদর্শ সবার কাছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিলো সব অন্যায়ের উর্ধে। কিন্তু এখন রাজনীতিতে জড়িয়ে শিক্ষকরাই হয়ে গেছে কলঙ্কিত। আর এর সাথে সাথে তারা লিপ্ত হয়েছে দুর্নীতিতে। আমাদের গরিব দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাজেট থাকে খুব কম। গবেষণায় যেখানে বেশি বাজেট থাকার কথা সেখানে খুব কমই থাকে। সেই কম বাজেটই এখন খরচ হয় মূলত বঙ্গবন্ধু নিয়ে গবেষণায়। আর গবেষণার নামে চলে কিছু নীতিহীন শিক্ষকের চাটুকারিতা। গবেষণার বদলে তার চাটুকারিতা করে টাকা পকেটে ভরেন। সেই চাটুকারিতা দিয়েই তারা পার পেয়ে যান। এগুলা তো কিছু নমুনা মাত্র।

আগস্ট মাসে শোক দিবসের নাম করে কতো যে দুর্বৃত্তিপরায়ন হয় বাংলাদেশে তার কোন সীমা নেই। সবাই আছে বঙ্গবন্ধুকে বিক্রি করে নিজের আখের গোছাতে। অবশ্য করবে না-ই-বা কেনো? যে দেশের সরকার থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত দুর্নীতি ছেয়ে গেছে সেখানে সরকারি অফিসে কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্টানে ভিন্ন দৃশ্য মানায় না। যে দেশে আইনের শাসন কায়েম কারিরাই আইনের তোয়াক্কা না করে দুর্নীতিতে নিমগ্ন হয় সেদেশে এটাই স্বাভাবিক। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের কথা নাই বললাম। যারা নিজেরাই দুর্নীতিতে লিপ্ত তারা দুর্নীতি দমন করবে কি? ফরমায়েশি কমিশন যেমন হওয়ার কথা তেমনই হয়েছে। মধ্যখানে শুধু পুড়েছে দেশের মানুষের ভাগ্য।