21 October 2021

ইসলাম কখনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়াকে সমর্থন করে না

সম্প্রতি দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গা পুজা। কিন্তু নিতান্ত দুঃখজনক বিষয়, কুমিল্লা এলাকার একটি পূজামণ্ডপে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনের অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়, তাদের ঘরবাড়ি ইত্যাদির ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের খবরের সঙ্গে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলকে প্রমাণ ছাড়া যুক্তিহীনভাবে যাকে তাকে দোষারোপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টাও চালাতে দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এই সুযোগকে ইসলামপন্থীদের শায়েস্তা করার কাজে লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। 


বস্তুতঃ ইসলাম কখনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়াকে আদৌ সমর্থন করে না। প্রকৃত কথা হচ্ছে, যেসব অপরাধীরা এ ধরনের নারকীয় তান্ডব ঘটিয়ে থাকে, তারা নিজেদের যদি ইসলাম ধর্মের অনুসারী দাবিও করে থাকেন, তবু সত্যিকারার্থে তারা ইসলাম ধর্মের আদর্শের কেউ নন। তারা ইসলাম ধর্মের আদর্শ, আবেগ, অনুভূতি জলাঞ্জলী দিয়ে অন্যায় অত্যাচারে লিপ্ত হওয়ার কারণে তারা শুধু ইসলাম ধর্মের শত্রুতেই পরিণত হননি, বরং মানবতারও এরা শত্রু। কারও ঘরে অগ্নিসংযোগ করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া, বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করা - এগুলো সাধারণ কিংবা ক্ষমার যোগ্য কোন অপরাধ নয়। এসব কাজ জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। এসব অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত। 

সেই সাথে কঠোর থেকে কঠোরতম পন্থায় তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন যারা পবিত্র আল কুরআন অবমাননার সাথে জড়িত। এইক্ষেত্রে উপযুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণসহ অপরাধীকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার মত করে বিচারের নামে ভিন্নমত পোষনকারীদের দমনে এই ঘটনাকে ব্যবহার করা হলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবার আশা করা দূরুহ। আর তাছাড়, সুনিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া কাউকে হয়রানি করা কিংবা অন্যায়ভাবে নিরপরাধ ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করা আরেকটি গর্হিত অপরাধ। এতে করে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বৈরাচারিতা এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, ভক্তি এবং শ্রদ্ধাবোধ বিনষ্ট হবে। বিচার হাতে তুলে নেয়ার মত ঘটনার জন্ম হওয়ার এটিও একটি অন্যতম কারণ।