11 October 2021

বেপরোয়া ছাত্রলীগকে থামাবে কে?

ছাত্রলীগকে এখন আর কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কারো নিয়ন্ত্রণই যেন মানতে চাইছে না তারা। কারো পরোয়াই করছে না। ছাত্রলীগের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে সবখানে। টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে এমন কোনো অপকর্ম নেই, যেখানে ছাত্রলীগ নেই। পত্রিকায় ছাত্রলীগের অপকীর্তির খবর বের হচ্ছে নিয়মিত।


অথচ একসময় ছাত্ররাজনীতিতে আসত মেধাবী ছাত্ররা। ছাত্ররাজনীতির সেই সোনালি দিন এখন আর নেই। এখন ছাত্ররাজনীতিতে যাদের দেখতে পাওয়া যায়, তাদের অনেকেই অছাত্র। এদের আধিপত্য রক্ষায় অনেক ছাত্রের ছাত্রজীবন চলে যাচ্ছে। ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট পাওয়া যায় না। অপরাজনীতির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে ছাত্রদের। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র। নগদ টাকার প্রলোভন ত্যাগ করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। নগদ প্রাপ্তির লোভেই অনেক ছাত্র জড়িয়ে যাচ্ছে টেন্ডারবাজিতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একসময় ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানও যেন অগ্রাহ্য করা হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগ যখন সরাসরি সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের অপরাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে যায়, তখন তো বলতেই হয়, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান অগ্রাহ্য করেছে তারা। হ্যাঁ, ছাত্রলীগে ভেজাল ঢুকে গেছে, এ কথা হয়তো সত্য। নিজেদের রক্ষা করতে অনেকেই ছাত্রলীগে নাম লেখাতে পারে। কিন্তু এই ছাত্রলীগ যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁদের এখানে ভূমিকাটা কী? নাকি তাঁরাই ব্যবহার করছেন ছাত্রলীগকে?

আমাদের দেশের রাজনীতিতে পেশিশক্তির ব্যবহার নতুন কিছু নয়। পেশিশক্তি বারবারই দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। সে পথেই যদি ছাত্রলীগ যায়, বেছে নেয় সন্ত্রাসের পথ, তাহলে মানুষের দাঁড়ানোর জায়গাটি আর কোথায় থাকে? তাই শক্ত হাতে দমন করতে হবে ছাত্র নামধারী ছাত্রলীগ নামক এ দুর্বৃৃত্তদের। আর কত সহ্য করবে দেশের মানুষ? ছাত্ররাজনীতির নামে এ সন্ত্রাস আর কত?