পদ্মা সেতুর অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য খরচ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে তাকে দেশদ্রোহী, রাজাকার, পাকিপ্রেমী, বিম্পি জামাত ট্যাগ দেয়ার কিছু নেই। সে যেহেতু দেশের নাগরিক, ট্যাক্স দেয়, তাঁর অধিকার আছে জানার যে কোথায় কোথায় কেমন খরচ হলো। এসব জানতে চাওয়া হয়না বলেই সরকারি প্রতিষ্ঠানের মামুলি গাড়ির ড্রাইভার আজকে রাজপ্রাসাদে বাস করে। হাজার হাজার কোটি কাটা সরকারি দলের আতি পাতি নেতার পকেটে চলে যায়।
সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের দেশে এইরকম সহজ স্বাভাবিক চিন্তা করার মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিতের কথা বাদই দিলাম, শিক্ষিত লোকজনকেও এমনসব কথাবার্তা বলতে শুনি যা শুনলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে। বুয়েটে ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করা হলো, আদালতে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনারা জানেন ছাত্রদের পেটানো হয়, তাহলে বাঁধা দেন না কেন? উনি খুব সহজ সরল স্বীকারোক্তি দিলেন আদালতে। তিনি বললেন বাঁধা দিলে তাঁরাও মার খেতেন।
মূল কথা হচ্ছে, সমাজে সৎ যোগ্য দিকপালের সংখ্যা আশংকাজনকহারে কম। যে কারনে মূর্খের এত ছড়াছড়ি। যে কারনে জাতিগতভাবেই আজকে সুস্থ সুন্দরভাবে চিন্তা করার শক্তি ও ক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলছি। কেন? কারন একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধ। জেনারেল রাও ফরমান আলীর মাস্টার প্ল্যান। বাঙালি জাতির মাথাকে ধীরে ধীরে গুড়িয়ে দেয়া। পঁচিশে মার্চ থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের তের-চৌদ্দ-পনেরো তারিখ পর্যন্ত যা চলে।
যে কারনে দেশ স্বাধীনের পর মূর্খ ও চাটুকারেরা এগিয়ে এসে তাঁদের স্থান দখল করে নেয়। মাইকে তারাই গলাবাজি করে বেড়ায়। কেউ যুক্তির কথা বলতে এলে, কেউ সৎ সুন্দরের দিকে ডাকতে এলে তাঁদের দাবিয়ে ফেলা হলো। কথা বলতে গেলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়, এই না সাঁড়াশি আক্রমন ধেয়ে আসে! বুদ্ধিজীবী দিবসের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি হচ্ছে, কিছু বাঙালি একে অপরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের "শুভেচ্ছা" দিয়ে বেড়াচ্ছে।