দুর্নীতি যারা করছে, তারা ইচ্ছামত করছে। কোন শাস্তি হয় না। পার পেয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তারা বেপোরোয়া হয়েছে। পৃথিবীর যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২ তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় আফগানিস্তানে। এরপরই বাংলাদেশের অবস্থান। দুর্নীতি যে একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এই অপরাধে যে সবার জন্য আইন সমান, সেই ধারণা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দুর্নীতি দমন কমিশন সম্প্রতি কিছুটা সক্রিয় হলেও তাদের তৎপরতা নিম্ন এবং মাঝারি পর্যায়ে। তারা উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। হয়তো আইনের দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা আছে।
শেখ মুজিব দুর্নীতিকে দেশের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। শেখ হাসিনা এখন দেশ পরিচালনা করছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনিও সোচ্চার। দুর্নীতির কারণে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকার জিডিপি হারাচ্ছে দেশ। দুর্নীতি করে তারাই যারা সরকারের সঙ্গে যুক্ত। সুতরাং সরকার যদি প্রশ্রয় না দেয় তাহলে দুর্নীতি কমবে। কেন দুর্নীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না? যে দল ক্ষমতায় বা সরকারে থাকে, তাদের দলের নেতাকর্মীরা কিংবা দলীয় ছত্রছায়ায় অনেকেই দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যায়। বিএনপির আমলে ফালু কালু মালু খুব দূর্নীতি করেছে। কি হয়েছে তাদের? তারা তো বেশ ভালোই আছে। এখনও দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দামী গাড়ি হাকাচ্ছেন।
দুর্নীতিবাজদের বাংলার মাটি থেকে উত্খাত করা কখনও সম্ভব না। মানুষ চোর হয় বাধ্য হয়ে, প্রায়ক্ষেত্রেই। সমাজে যখন অভাব, চোরের অভাব হবে না সেইটাই নিয়তি। অভাব মোচনের জন্যে যা করা লাগবে সেইটাই করবে মানুষ। একবাক্যে, অভাবই দুর্নীতিকে বাড়ায়। শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান ছাড়া দেশের প্রতিটি সরকার প্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ গুলি দুর্নীতি পরায়ন না! দুর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষিত সমাজের একটি বিশেষ অংশ যারা সংখ্যাই কম। যাদের সকলেই প্রায় সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী? দূর্নীতি কিছু দিনের জন্য সুখী হাওয়া যায়, চিরস্থায়ী সুখের জন্য প্রয়োজন সততা, ন্যায়নিষ্ঠা সত্যবাদিতার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা।