11 June 2019

ডাকাত বড় হোক কিংবা ছোট, ডাকাতই তো

পার্শ্ববর্তী গ্রামে এক ডাকাত ছিল যার ডাকাতির যন্ত্রণায় গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে রাত জেগে একদিন সেই ডাকাতকে ধরে চরম উত্তম মাধ্যম দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ঘোল ঢেলে সারা গ্রাম ঘুড়িয়ে নাকে খত দিয়ে ছেড়ে দিলো এই মুচলেকা নিয়ে যে সে আর ডাকাতি করবে না। গ্রামবাসীর ঐ লাঞ্ছনা ও লজ্জা সহ্য করতে না পেরে সেই ডাকাত ঘোষণা দিয়ে ডাকাতি ছিঁড়ে দিলো; অধিকন্তু শরীরে আগের মতো শক্তিও নাই যে কৃষকের ধানের গোলা হতে ধানের বস্তা মাথায় করিয়া পালানো যাবে। এই দিকে এত কষ্ট করিয়া চুরি করিবার পরে সেই হাটে গিয়া ধানের ন্যায্য মূল্যও পাওয়া যায় না। অতঃপর গ্রামবাসী স্নস্তির নিঃশ্বাস ছাড়িয়া মনে-মনে কইল, যাক, এখন থেকে সুখে-শান্তিতে বসবাস করা যাইবে।

ঐ দিকে ডাকাতই ছাড়িয়া দেওয়া পরে ডাকাত পরিবারের সংসার চলানো কষ্ট কর হইয়া পড়িল। ডাকাতের ছেলেকে কেউ কাজ দিতে চায় না বাবার ডাকাতির ইতিহাস থাকিবার কারণে। অতঃপর বাবার পথ অনুসরণ করিয়া ছেলেও ডাকাতি শুরু করিল। ধানের অতি অল্প মূল্য, সেই সাথে ডাকাতির পরে ধানের বস্তা মাথায় করিয়া নিয়া পালানো অনেক বেশি রিস্ক হয়ে যায় ভাবিয়া ডাকাত পুত্র গৃহস্হ্যের ঘরের সিঁথ কাটিয়া প্রবেশ করিয়া গৃস্হ্য বধূর অলংকার চুরি করিতে লাগিল; সেই সাথে প্রতিশোধ নিতে গৃহস্থ বধূর-কন্যার শ্লীলতাহানি করিতে লাগিল ও গৃহস্থ বাড়িতে আগুন দিতে লাগিল। ডাকাত পুত্রের এই রকম নৃশংসতা দেখিয়া গ্রামবাসী মর্মাহত হইয়া আক্ষেপ করিতে লাগিল যে পুত্র অপেক্ষা পিতাই ভালো ডাকাত ছিল। ঘরে সিঁধ কাটিয়া ধানের বস্তা চুরি করিলেও গৃহস্হ্য বধূর-কন্যার শ্লীলতাহানি করিতও না আর চুরি শেষে গৃহস্থ বাড়িতে আগুনও দিতো না।

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত এর কাছ থেকে আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নিয়ে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়ার ৩ মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালের শুরুতে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। আর এখন তা বেড়ে হলও প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ বছর ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ গুণ। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক তথ্য। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারাই বলছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি। অনেক ব্যাংক বড় অঙ্কের ঋণ আদায় করতে পারছে না, আবার তা খেলাপি হিসেবেও চিহ্নিত করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও এতে নজর দিচ্ছে না। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের অজুহাতে প্রতিবছরই ব্যাংকগুলো নানা ছাড় নিচ্ছে। এতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্যও বেরিয়ে আসছে না। পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাংকগুলোর প্রকৃত চিত্র।

বাংলাদেশের মানুষ গত ১০ বছরের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিতের কার্যক্রম দেখে এমনই বিরক্ত হয়েছে ও সমালোচনা করেছে যে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস সম্ভবত প্রথম রাজনীতিবিদ হিসাবে দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ও নিজে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন ও সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করে অবসরে গিয়েছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যেন পণ করেছেন সেই ডাকাত পুত্রের মতো এটা প্রমাণ করিতে যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত কত ভালো অর্থমন্ত্রী ছিলেন তা বাংলাদেশের মানুষকে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। সে জন্যই কিনা দেশের সবচেয়ে বড় ঋণ খেলাপি ও দূর্ণিতীবাদ দরবেশ বাবাকে পাশে বসিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়া আনবেন এই ঘোষণা দেওয়ার মাত্র ৩ মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ বাড়িয়া গিয়েছে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। ডাকাত পুত্রের নৃশংসতা দেখিয়া গ্রামবাসীর উপলব্ধি হইয়াছিলে যে পুত্রের অপেক্ষা পিতাই ভালো ডাকাত ছিল। তেমনি বাংলাদেশের মানুষের উপলব্ধি হইতেছে যে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অপেক্ষা সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত অনেক ভালো ব্যাংক ডাকাত ছিল।

আজকে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সংবাদ শিরোনাম ছিলো - লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণ। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালের শুরুতে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। আর এখন তা বেড়ে হলও প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ বছর ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ গুণ। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক তথ্য। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারাই বলছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি। অনেক ব্যাংক বড় অঙ্কের ঋণ আদায় করতে পারছে না, আবার তা খেলাপি হিসেবেও চিহ্নিত করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও এতে নজর দিচ্ছে না। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের অজুহাতে প্রতিবছরই ব্যাংকগুলো নানা ছাড় নিচ্ছে। এতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্যও বেরিয়ে আসছে না। পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাংকগুলোর প্রকৃত চিত্র।

বাংলাদেশের মানুষ গত ১০ বছরের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিতের কার্যক্রম দেখে এমনই বিরক্ত হয়েছে ও সমালোচনা করেছে যে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস সম্ভবত প্রথম রাজনীতিবিদ হিসাবে দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ও নিজে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন ও সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করে অবসরে গিয়েছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যেন পণ করেছেন সেই ডাকাত পুত্রের মতো এটা প্রমাণ করিতে যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত কত ভালো অর্থমন্ত্রী ছিলেন তা বাংলাদেশের মানুষকে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। সে জন্যই কিনা দেশের সবচেয়ে বড় ঋণ খেলাপি ও দূর্ণিতীবাদ দরবেশ বাবাকে পাশে বসিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়া আনবেন এই ঘোষণা দেওয়ার মাত্র ৩ মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ বাড়িয়া গিয়েছে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা।