21 May 2019

বাংলাদেশের অর্থনীতি আর আমাদের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি নেতৃত্ব

কিছু করার বা বলার পূর্বে আমাদের ব্রেইন বিদ্যুৎ গতিতে তার নেগেটিভ ও পজেটিভ বিভিন্ন দিক ভেবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত দেওয়ার চেস্টা করে। যাদের ব্রেইন একসাথে নেগেটিভ-পজেটিভ বা একাধিক চিন্তা করার ক্ষমতা রাখে না; সমাজ, রাস্ট্র তাদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলে ট্যাগ দেয়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের কর্মকাণ্ড, কথাবার্তা সমাজ-রাস্ট্রের কাছে মূল্যহীন! কিন্তু সমাজ বা রাস্ট্রের বড়বড় চেয়ারে বসে বসে কিছুকিছু মানুষকে নিয়মিত বড়বড় কথা বলতে শুনা যায়। তাদের কথাগুলো শুনতে অনেকটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের কথাবার্তার মতো বেসামাল শুনায়। মনে হয় মাত্রাতিরিক্ত মদ বা নেশাজাতীয় কিছু সেবন করে কথা বলছেন। যেহেতু মদ বা নেশাজাতীয় দ্রবাদি কিছুক্ষণের জন্য ব্রেইনের কর্মকাণ্ড স্থবির করে দেয়। তাই মাত্রাতিরিক্ত মদ পানকারী মানুষগুলোও মদ্যপানের পর কিছুসময়ের জন্য বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের মতো বেসামাল কথাবার্তা বলে থাকে।

সম্প্রতি আমাদের অর্থমন্ত্রী ব্লুমবার্গের জরিপের সূত্র ধরে বলেছেন, দেশের অর্থনীতি নাকি কানাডা ও থাইল্যান্ডের সমান। ব্লুমবার্গের জরিপ, মন্ত্রী সাহেবের বক্তব্যের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলেও সবি আমার কাছে চাপাবাজি- গাজাখুরি মনে হচ্ছে কারণ আমি বাস্তবে দেশের মানুষের দিনযাপন চিত্র দেখছি। দেখছি, কৃষকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করেও দুইবেলার খাবার যোগাড় করতে পারছেন না। প্রথমআলোতে "হাওরের ধানে খুশি কৃষক, দাম নিয়ে চরম হতাশা"- শিরোনামে কৃষকদের হাহুতাশের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। জাতীয় দৈনিকগুলোতে চাকরিহীন বাবার দুধ চুরির নিউজ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়ার কারণে দিনমজুর শ্রমিক, প্রবাসী, সাধারণ চাকুরীজীবিদের ভাগ্যেরও কোনো উন্নতি ঘটছে না।

২০১৬ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণায় পাওয়া তথ্যমতে দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১০ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ এখনও দরিদ্র। যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। এছাড়া মোট জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৫ কোটি এক লাখ মানুষ মধ্যবিত্ত শ্রেণির। আর ৪৪ লাখ বা মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ ধনী। অর্থ্যাৎ দেশের অর্থনীতি মাত্র ২.৭ শতাংশ কিংবা তার চাইতেও কম মানুষের পকেটে। দিনদিন এই ২-৩ শতাংশ মানুষই আংগুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বিপরীতে বাকিরা হচ্ছে নিঃস্ব, স্বর্বস্বান্ত। এমতাবস্থায় মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের এমন বক্তব্য চাপাবাজি, গাজাখুরির ক্যাটেগরিতে না ফেলা নিসন্দেহে দলান্ধতার লক্ষণ।