20 October 2015

মুক্তি পেলেন 'মজার স্কুল' এর সেই ভিক্টিমরা

সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করাও আজ আমাদের দেশে বিরাট অপরাধ। যাদের কাজ সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য সব ধরণের সুবিধা নিশ্চিত করা তারা তো সেটা করছেই না, বরং অন্য কেউ ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো নিজ দায়িত্বে সেই সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করতে গেলে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। মানবতার সেবা করাই যেখানে অপরাধ হিসাবে গন্য করা হয় সেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হয় বৈকি।


অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চার স্বেচ্ছাসেবী আরিফুর রহমান, হাসিবুল হাসান, জাকিয়া সুলতানা ও ফিরোজ আলম সেরকমই কয়েকজন হতভাগা। তাদের একমাত্র অপরাধ তারা সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফুটানোর দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছিলেন। তারা সেই সব শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেয়েছিলেন। আর সেই অপরাধের শাস্তিস্বরুপ দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময় আটক থাকার পর অবশেষে জামিন পেয়েছেন সেই চার স্বেচ্ছাসেবী।



চার স্বেচ্ছাসেবীকে আটকের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তোলপাড়। দেশের স্বনামধন্য ব্যাক্তিগণও ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। মজার স্কুলের নিবন্ধনের কাগজসহ পেজ খুলে দাবি করা হয় ‘আরিয়ান, আরিফ, জাকিয়া, ফিরোজরা শিশু পাচারকারী নয়।’ এর আগে তাদের কাজের সঙ্গে পরিচিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আশীফ এন্তাজ রবি ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা স্ট্যাটাসে তাকে বিষয়টি দেখার আকুল আবেদন জানালে সেখানে মুখ্য প্রেস সচিব ও উপ প্রেস সচিব যোগাযোগ করেন।


এরই ধারাবাহিকতায় অবশেষে মুক্তি পেলেন এই তিন উদ্যমী সমাজকর্মী। তারা তো অবশেষে মুক্তি পেলেন। কিন্তু যে মানষিক শক্তি নিয়ে তারা মানবসেবায় নিয়োজিত হয়েছিলেন সেই একই শক্তি কি এখনো তাদের মধ্যে রয়েছে? তারা কি পারবেন আগের মতো আবারও ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো কাজে নিজেদের লিপ্ত করতে? ধরে নিলাম তারা পারবে। তাদের মতো তরুনরা এতো সহজে হার মানবার নয়। কিন্তু নতুন করে কেউ সমাজসেবায় নিজেদের যুক্ত করতে কি আগে কয়েকবার ভাববে না? সমাজ কি সেই তরুনদের সেবা হতে বঞ্ছিত হবে না?